বেসরকারিভাবে নিয়ন্ত্রিত চাল আমদানির অনুমতি

September 24, 2023 0 Comments

চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে শুল্কহার কমিয়ে বেসরকারিভাবে চাল আমদানি উন্মুক্ত করেছে সরকার। তবে আমদানি হবে নিয়ন্ত্রিতভাবে। খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার গতকাল এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, চালের বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। ২৪ ডিসেম্ব্বর বেসরকারিভাবে চালের আমদানি শুল্ক কমাতে প্রধানমন্ত্রী অনুমতি দিয়েছেন। সে আলোকে বেসরকারিভাবে চাল আমদানি শুল্ক আগের ৬২ দশমিক ৫০ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। বৈধ আমদানিকারকরা বেসরকারিভাবে চাল আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ২০২১ সালের ১০ জানুয়ারির মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করবেন। পরবর্তী সময়ে একটা নীতিমালার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে খাদ্য মন্ত্রণালয় তাদের চাল আমদানির অনুমতি দেবে। নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হবে।

সরকার নির্ধারিত দামে মিলাররা চাল দেবে না বলে যে ঘোষণা দিয়েছে, সেটিকে মন্ত্রণালয় কীভাবে দেখেছেন—সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার কারো কাছে মাথা নত করে না। তারা এ ধরনের হুমকি নিয়ে থাকুক। আমরা পীড়াপীড়ি করিনি। তবে চুক্তি করে চাল না দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। মজুদ সক্ষমতা বাড়াতে প্রয়োজনে কৃষকের কাছ থেকে ১৫-২০ লাখ টন ধান সরাসরি ক্রয় করা হবে। এজন্য ধান বিক্রিও উন্মুক্ত করা হয়েছে। যেকোনো কৃষক ১ হাজার ৪০ টাকা দরে ধান বিক্রি করতে পারবেন। যদিও বাজারে একটু বেশি দাম পাচ্ছেন বিধায় কৃষকরা এ মুহূর্তে আগ্রহী হচ্ছেন না। আর সরকারিভাবে এরই মধ্যে চার লাখ টন চাল আমদানির টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ভারতের সঙ্গে জিটুজি ভিত্তিতে দেড় লাখ টন চাল আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ফলে স্বল্প সময়ের মধ্যে চাল আমদানির মাধ্যমে মজুদ বাড়ানো সম্ভব হবে।

চাল আমদানির অনুমতির ক্ষেত্রে উৎপাদন পরিস্থিতি কতটুকু বিবেচনায় নেয়া হয়েছে—এমন প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের চালের বাজারে দাম স্থিতিশীল থাকলেও তা এখনো বেশ উঁচুতে রয়েছে। বাজারে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি আরো বাড়ানো হবে। সরকারিভাবে চাল আমদানি করে মজুদ বাড়ানোর পাশাপাশি বাজারে সরবরাহও বাড়ানো হবে। এছাড়া দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমনের উৎপাদন কম হতে পারে। তবে সেটি কোনোভাবেই ঘাটতিতে নেই। আবাদি জমির পরিমাণ ঠিক রয়েছে। হেক্টরপ্রতি ফলন কমার কারণে উৎপাদন কিছুটা কমতে পারে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে এমন কোনো মানদণ্ড নেই যেটির মাধ্যমে কৃষক ও ভোক্তা উভয়ই সন্তুষ্ট থাকবেন। চালের দাম বাড়লে কিংবা ধানের দাম কমে গেলে হাহাকার শুনতে হয়। কিন্তু এ দুটি পণ্যের দাম কতটা হলে স্বাভাবিক বা ন্যায্য এমন কোনো মানদণ্ড নেই। সে বিষয়েও কাজ করা হচ্ছে। এজন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। তারা চাল ও ধানের সহনীয় দাম নিয়ে নীতিমালা তৈরি করবে।

খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদ ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক আজিজ মোল্লাসহ খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, চলতি বছরের ১৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছিলেন। সে ধারাবাহিকতায় সরকারিভাবে চাল আমদানি শুরু হয়। কিন্তু কৃষকের ধানের দাম নিশ্চিত করতে বেসরকারিভাবে একটু দেরিতে অনুমোদন দেয়া হলো। তবে সেটিও ঢালাওভাবে নয়। চাল আমদানিকারকদের আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই করে কাকে কতটুকু চাল আমদানির অনুমোদন দেয়া যায় সে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। শুধু বৈধ ও অভিজ্ঞ আমদানিকারকদের চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হবে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া কেউ কোনো ধরনের চাল আমদানি করতে পারবে না।

Leave A Comment

To Top