জাতীয় পুরস্কারে ধান চাষিরা উপেক্ষিত

September 19, 2023 0 Comments
দেশের ৭৬ শতাংশ জমিতে এখন ধানের আবাদ হয়। বাংলাদেশে একজন মানুষ প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩৬৬ গ্রাম চাল গ্রহণ করছে। সে হিসাবে বছরে একজন মানুষের চাল লাগছে ১৩৪ কেজি। এই চালের প্রায় পুরোটাই জোগান দিচ্ছেন সাধারণ কৃষক।
পাশাপাশি চালকেন্দ্রিক শিল্প খাতের পণ্য উৎপাদন ও পশুখাদ্যের জোগানও দিচ্ছেন কৃষক। কয়েক বছর ধরে কৃষি খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও কৃষককে উৎসাহিত করতে নানা পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। জাতীয় পুরস্কার, অ্যাগ্রিকালচার ইমপর্ট্যান্ট পারসন (এআইপি) এবং সংস্থাভিত্তিক বেশ কিছু পুরস্কারেরও ব্যবস্থা আছে। কয়েক বছরের পুরস্কারের তালিকা পর্যালোচনা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতামতের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, এসব পুরস্কারে ধান আবাদকারী কৃষকরা উপেক্ষিত থাকছেন।
অথচ দেশের দেড় কোটির বেশি কৃষক এখন ধান আবাদে নিয়োজিত। পুরস্কারের নীতিমালা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, তাতে তাঁদের অবদান মূল্যায়নের ব্যবস্থাই নেই। ফলে সব ধান আবাদকারী কৃষকরা এসব পুরস্কারের জন্য আবেদন করতে পারছেন না। আবার কিছু ক্ষেত্রে আবেদনের সুযোগ থাকলেও অবদানের বিষয়গুলো এমনভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে, তাতে ধান চাষ করা কৃষকরা বাছাইয়ে টিকতে পারছেন না।
খাদ্য নিরাপত্তার প্রধান কারিগর দেশের ধান চাষিদের এভাবে অবমূল্যায়ন তাঁদের উৎপাদনে নিরুৎসাহ করতে পারে।  কৃষি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশের ধান আবাদে কৃষক মূলত আর্থ-সামাজিকভাবে ছোট ও সমাজের প্রান্তিক গোষ্ঠী হওয়ার কারণে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্তিতে তাঁরা গুরুত্ব কম পাচ্ছেন। কৃষকদের পুরস্কার দিতে হলে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের মাধ্যমে স্বীকৃতি প্রদান করে একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তাঁদের জাতীয়ভাবে নির্বাচন করতে হবে। ব্যাখ্যা করে তাঁরা বলেন, অনেক কৃষক আছেন, যাঁরা গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের উদ্ভাবিত  জাতগুলো দ্রুত সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখছেন। বিশেষ কিছু কৃষক ধান উৎপাদনে তাঁদের নিজস্ব উদ্ভাবনী সক্ষমতা দেখাচ্ছেন।
এ ছাড়া নিরাপদ ধান উৎপাদন, বিশেষ করে বালাই ও কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদন করছেন অনেক কৃষক। তাঁদের বিবেচনায় নেওয়া উচিত।আবার ধানের উৎপাদনে দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বেশ সফলতা দেখাচ্ছে। বিশেষ করে হাইব্রিড ধানের জাত সম্প্রসারণের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তায় বিশেষ ভূমিকা রাখছেন অনেকে। পুরস্কারের নীতিমালায় এগুলো সংযুক্ত করা যায়। বাংলাদেশ ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান (ব্রি) কিংবা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এই উদ্যোগ নিতে পারে। পরবর্তী সময়ে জাতীয় পুরস্কারে তাদের স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন ও কার্যকরের উদ্যোগ গ্রহণ করা যায়। বাংলাদেশ ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবীর কালের কণ্ঠকে বলেন, দেশে ধান আবাদকারী দেড় কোটির বেশি কৃষক হলেন খাদ্য নিরাপত্তার মূল সৈনিক। তাঁদের পুরস্কারহীনতায় রেখে সামনের দিনে টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হবে। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে ধান উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে পড়েছে। ধানের আবাদ বাড়াতে একটা নতুন মোমেন্টাম প্রয়োজন। ধান চাষিদের পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে তা সৃষ্টি করা যেতে পারে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, দেশের কৃষিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার হলো বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার (আগে ছিল রাষ্ট্রপতি কৃষি উন্নয়ন পদক)। কৃষিক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে পুরস্কারটি ১৯৭৩ সাল থেকে দেওয়া হচ্ছে। চলতি বছর থেকে কৃষি খাতে নতুন পুরস্কার প্রদান শুরু হয়েছে। প্রথমবারের মতো কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) ২০২০ পুরস্কার পেয়েছে ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। তবে সেই তালিকায় শুধু ধান উৎপাদনে জড়িত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ছিল না। বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হলেও মূলত সবজি ও আলুর বীজ উদ্ভাবন, বাজারজাতকরণের জন্য দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আর মাছ চাষের জন্য প্রতিবছর জাতীয় মৎস্য পদক দেওয়া হচ্ছে। জাতগুলো দ্রুত সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখছেন। বিশেষ কিছু কৃষক ধান উৎপাদনে তাঁদের নিজস্ব উদ্ভাবনী সক্ষমতা দেখাচ্ছেন। এ ছাড়া নিরাপদ ধান উৎপাদন, বিশেষ করে বালাই ও কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদন করছেন অনেক কৃষক। তাঁদের বিবেচনায় নেওয়া উচিত। আবার ধানের উৎপাদনে দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বেশ সফলতা দেখাচ্ছে। বিশেষ করে হাইব্রিড ধানের জাত সম্প্রসারণের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তায় বিশেষ ভূমিকা রাখছেন অনেকে। পুরস্কারের নীতিমালায় এগুলো সংযুক্ত করা যায়। বাংলাদেশ ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান (ব্রি) কিংবা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এই উদ্যোগ নিতে পারে। পরবর্তী সময়ে জাতীয় পুরস্কারে তাদের স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন ও কার্যকরের উদ্যোগ গ্রহণ করা যায়। বাংলাদেশ ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবীর কালের কণ্ঠকে বলেন, দেশে ধান আবাদকারী দেড় কোটির বেশি কৃষক হলেন খাদ্য নিরাপত্তার মূল সৈনিক। তাঁদের পুরস্কারহীনতায় রেখে সামনের দিনে টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হবে। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে ধান উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে পড়েছে। ধানের আবাদ বাড়াতে একটা নতুন মোমেন্টাম প্রয়োজন। ধান চাষিদের পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে তা সৃষ্টি করা যেতে পারে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, দেশের কৃষিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার হলো বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার (আগে ছিল রাষ্ট্রপতি কৃষি উন্নয়ন পদক)। কৃষিক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে পুরস্কারটি ১৯৭৩ সাল থেকে দেওয়া হচ্ছে। চলতি বছর থেকে কৃষি খাতে নতুন পুরস্কার প্রদান শুরু হয়েছে। প্রথমবারের মতো কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) ২০২০ পুরস্কার পেয়েছে ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। তবে সেই তালিকায় শুধু ধান উৎপাদনে জড়িত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ছিল না। বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হলেও মূলত সবজি ও আলুর বীজ উদ্ভাবন, বাজারজাতকরণের জন্য দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আর মাছ চাষের জন্য প্রতিবছর জাতীয় মৎস্য পদক দেওয়া হচ্ছে।

Leave A Comment

To Top