যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) বৈদেশিক কৃষি সেবা বিভাগের তথ্য বলছে, গত অর্থবছরে (২০২১-২২) বাংলাদেশ মোট দেড় হাজার কোটি ডলারের (প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা) বেশি কৃষিজাত পণ্য আমদানি করেছে। এর মধ্যে প্রায় ১৪ শতাংশই ভোগ্য পণ্য। এসব পণ্য আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ২১০ কোটি ডলার।
ইউএসডিএর তথ্য মতে, ভোগ্য পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের একক নির্ভরতা বাড়ছে ভারতের ওপর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক যুগের পরিসংখ্যান বলছে, গড়ে প্রতিবছর প্রায় ৪৩ লাখ টন গম আমদানি করে বাংলাদেশ। কিন্তু গম আমদানির উৎস হিসেবে ভারত খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। যদিও সেই পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য মতে, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ছিল প্রায় এক হাজার ৫৯৩ কোটি ডলারের। এর মধ্যে ভারত থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি হয়েছে এক হাজার ৩৯৩ কোটি ডলারের। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় ২০০ কোটি ডলারের। যদিও ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর তথ্য মতে, বাংলাদেশ ও ভারতের বাণিজ্য ছাড়িয়েছে এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ভারত থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি হয় এক হাজার ৬২০ কোটি ডলারের পণ্য।
এদিকে চলতি অর্থবছরে কৃষি ও খাদ্য পণ্যের পাশাপাশি অনান্য পণ্যের আমদানিনির্ভরতা বৃদ্ধির কারণে ভারত থেকে আমদানি আরো বাড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ ক্ষেত্রে ভারতসহ চীন থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে স্থানীয় মুদ্রায় বিনিময় করার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি জোরালো হচ্ছে।
এ বিষয়ে খাদ্যসচিব আবদুল লতিফ মণ্ডল কালের কণ্ঠকে বলেন, আমদানি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি মুদ্রা বিনিময় হার অনুকূলে না থাকায় আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামনের দিনে খাদ্য ও ভোগ্য পণ্যের আমদানির ক্ষেত্রে ভারতনির্ভরতা আরো বাড়বে। তুলনামূলক কিছু সুবিধার কারণে ভারত থেকে আমদানিনির্ভরতা বাড়ছে। দ্রুত সময়ে পণ্য আমদানির সুযোগ, পণ্য আমদানিতে পরিবহন খরচ কম এবং সমুদ্রবন্দরের পাশাপাশি স্থলবন্দর দিয়ে যোগাযোগ থাকার কারণে ভারত এখন অন্যতম নির্ভরযোগ্য দেশ। এ ছাড়া দেশ দুটির মধ্যে রাজনৈতিক বোঝাপড়া বেশ ভালো থাকার কারণে বাণিজ্য স্বাভাবিকভাবেই হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশে ডলারের চাপ কমাতে চীন ও ভারতের সঙ্গে স্থানীয় মুদ্রায় লেনদেনের বিষয়ে সমীক্ষা করা যেতে পারে। বৈদেশিক বাণিজ্যে ডলারের একক আধিপত্যের কারণে আমদানিতে বাংলাদেশকে বেশ বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে।