সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এসব এলাকার মধ্যে রয়েছে শ্যামলী থেকে পঙ্গু হাসপাতাল হয়ে আগারগাঁও, ফার্মগেট থেকে কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ী থেকে শনির আখড়া, ধানমণ্ডি থেকে বিডিআর গেট, আজিমপুর থেকে পিলখানা, বঙ্গবাজার থেকে ফুলবাড়িয়া, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বসিলা, মোহাম্মদপুর তিন রাস্তা থেকে ওই এলাকার বাসস্ট্যান্ড, ফার্মগেট থেকে হলি ক্রস ও বিজ্ঞান কলেজ এলাকা এবং তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড ও রেলগেট। অন্যদিকে এয়ারপোর্ট থেকে টঙ্গী, ভাটারা থানা থেকে ১০০ ফিট রাস্তা হয়ে বালু নদ পর্যন্ত এলাকার ধুলাবালিতে জনজীবন অতিষ্ঠ।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (বায়ুমান) মো. জিয়াউল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ধুলাসহ অনিয়ন্ত্রিত অবকাঠামো উন্নয়ন, কলকারখানা ও যানবাহনের কারণে বায়ুদূষণ বাড়ছে। বায়ুদূষণ বিধিমালা কার্যকর হয়েছে। এ বিষয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করা হয়েছে। আমরা দ্রুত এ কমিটির মাধ্যমে বায়ুদূষণ প্রতিরোধে নির্দেশনা ও করণীয় ঠিক করব। এখন নির্মাণকাজ ঢেকে রাখা, নির্মাণ এলাকায় নিয়মিত পানি দেওয়া গেলে ধুলার প্রভাব কমানো সম্ভব।’
রাজধানীর ১০০ ফিট সড়কেও ধুলাবালির কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারী, যাত্রী ও আশপাশের মানুষকে। বারিধারা এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সামনের অংশ থেকে বালু নদ পর্যন্ত ৬.৭১ কিলোমিটার ইন্টারসেকশন সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। মাদানী এভিনিউ থেকে বালু নদ পর্যন্ত সড়ক ও সেতুগুলো প্রশস্তকরণের কাজ চলছে। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে মাদানী এভিনিউ থেকে বালু নদ পর্যন্ত সড়কটির প্রশস্ত করার কাজ এগিয়ে চলেছে। মাটি ও বালু দিয়ে ভরাট করার কাজ চলমান থাকায় সড়কে তৈরি হচ্ছে ধুলা। এই পথের বালু নদের ওপর নির্মিত হচ্ছে ছয় লেনের সেতুও। বাইপাস এই সড়কটি যুক্ত হচ্ছে পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে, আরেকটি অংশ যুক্ত হচ্ছে রূপগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নির্মিত গাজী সেতুর সঙ্গে।
ভাটারা এলাকার ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, দোকানের ধুলাবালি পরিষ্কার করতে করতেই দিন শেষ। কয়েক মাস ধরে সর্দি-কাশি তো লেগেই আছে। রাস্তায় যদি ঠিকমতো পানি ছিটানো হতো, তাহলে এত ধুলা উড়ত না। মাত্রাতিরিক্ত ধুলাবালি বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়াচ্ছে। এতে রাজধানীর মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে।
এ বিষয়ে ল্যাবএইড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীম কালের কণ্ঠকে বলেন, ধুলাবালি রাজধানীবাসীর জন্য নীরব ঘাতকে পরিণত হচ্ছে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধূলিকণা সহজেই ফুসফুসে ঢুকে মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে। বায়ুদূষণ ও ধুলাবালির কারণে চুলকানি, অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টজনিত রোগ বাড়ছে। শিশুরা নতুন ধরনের অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শিশু, বয়স্ক মানুষ এবং যাদের ডাস্ট অ্যালার্জি আছে, তারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে।