
সাহানোয়ার সাইদ শাহীন :
সারা দেশে চাহিদার চেয়ে কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ২০ লাখ ৬৮ হাজার বেশি হলেও ঢাকা বিভাগে ঘাটতি রয়েছে। এবার ঢাকা বিভাগে পশুর ঘাটতি আট লাখ ৬৫ হাজার। এর বেশির ভাগই রাজধানীকেন্দ্রিক। তবে রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটগুলোতে পশু আসা শুরু হয়েছে।
সারা দেশে পশুর দাম সহনীয় থাকায় রাজধানীবাসীও সহনীয় দামে পশু কিনতে পারবে বলে জানিয়েছেন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
এ বছর ঈদুল আজহা উদযাপন উপলক্ষে কোরবানিযোগ্য গবাদি পশুর তথ্য জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর (ডিএলএস)। ঢাকা বিভাগের এক লাখ ৩০ হাজার ৫৪টি পশুর খামারে এবারে মোট কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে ১৩ লাখ ৭২ হাজার ৫৬৭টি। এর মধ্যে গরু ও মহিষ সাত লাখ ১৫ হাজার ৮২৯টি, ছাগল ও ভেড়া ছয় লাখ ৫৬ হাজার ৩০৭টি এবং অন্যান্য পশু রয়েছে ৪৩১টি।
তবে ঢাকা বিভাগে চাহিদা রয়েছে ২২ লাখ ৩৭ হাজার ৬৮৫টি। এতে ঢাকা বিভাগে এবার পশুর ঘাটতি আট লাখ ৬৫ হাজার ১১৮টি।
জানা যায়, চলতি বছর কোরবানির জন্য রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৯টি স্থায়ী ও অস্থায়ী হাট বসেছে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় বসছে ১২টি পশুর হাট।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় বসছে সাতটি পশুর হাট। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি এলাকায় এখনো একটি হাটে ইজারা প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়নি। আর দক্ষিণ সিটিতে আরো দুটি হাটের ইজারার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এসব হাটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠি দিয়েছে ঢাকার দুই সিটি কর্তৃপক্ষ। তবে রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে পশুস্বাস্থ্য ও অন্যান্য বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (উৎপাদন) ড. এ বি এম খালেদুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, রাজধানীর পশুর হাটগুলো কঠোর তদারকি করা হবে। প্রতিটি নির্ধারিত কোরবানির পশুর হাটে ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম থাকবে। কোরবানির পশু নিরাপদ ও কোরবানি উপযোগী কি না বা তাদের শরীরে দূষিত পদার্থ প্রবেশ করানো হয়েছে কি না, তারা এ বিষয়ে পরীক্ষা করবে।
দেশের মানুষ নির্বিঘ্নে যাতে ভালো পশু কিনতে পারে, এ জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে। এ ছাড়া গরু মোটাতাজা করতে অ্যান্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েডজাতীয় পাম ট্যাবলেট ব্যবহার বন্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া হচ্ছে। দেশের সব পশুর হাট মনিটর করা হচ্ছে। বাজারে কোনো ধরনের অসুস্থ পশু যাতে আসতে না পারে, এ জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখনো রাজধানীর কোরবানির বাজার জমে ওঠেনি। পর্যাপ্ত পশুর জোগান থাকায় দাম সহনীয় রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত বাজারগুলোতে ১০টির মতো পশু বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে আজ থেকে হাট পুরো দমে জমে উঠবে বলে প্রত্যাশা রাজধানীর হাট ব্যবসায়ী ও পাইকারদের।
গতকাল রাজধানীর শাহজাদপুর বাজার, কমলাপুর ও ভাটারা এলাকার ১০০ ফিট পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, বিক্রির জন্য সারি সারি পশু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রতিটি হাটেই সুশৃঙ্খল কর্মী বাহিনী কাজ করছে। বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার ক্রেতারা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পশুর হাট ঘুরছে। তবে মধ্যবিত্ত এসব ক্রেতার পছন্দের শীর্ষে রয়েছে মাঝারি আকারের পশু।
শাহজাদপুর বাজারে বগুড়া থেকে ২৮টি পশু নিয়ে এসেছেন সাদিক মুবিন। তিনি বলেন, ‘তিন দিন ধরে দুই ট্রাক পশু নিয়ে এসেছি।
এখন পর্যন্ত একটা বড় এবং তিনটা মাঝারি আকারের পশু বিক্রি করতে পেরেছি। আজ থেকে পশু বিক্রি জমে উঠবে। তবে গতবারের শেষের দিকের তুলনায় এবার পশুর দাম কিছুটা কম রয়েছে।