২০২০-২১ অর্থবছরে মোট ৫৩ লাখ ৪৩ হাজার টন গম আমদানি করা হয়েছিল। এতে ব্যয় ছিল ১৩ হাজার ২১২ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে গম আমদানির পরিমাণ ছিল ৬৪ লাখ ৩৫ হাজার টন।
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) গম আমদানি হয়েছে ৯ লাখ ৮৪ হাজার টন। অথচ গত অর্থবছরের একই সময়ে গম আমদানি হয়েছিল ১৫ লাখ ৩০ হাজার টন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে গম আমদানিতে ব্যয় হয়েছে দুই হাজার ৬৩৯ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে সাবেক খাদ্যসচিব আব্দুল লতিফ মণ্ডল কালের কণ্ঠকে বলেন, গম আমদানির পরিমাণ কমার যথেষ্ট কারণ থাকতে পারে। কিন্তু গম আমদানি ব্যয় বাড়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। আটার দাম বাড়ার কারণে মানুষ গম খাওয়া কমিয়ে দিতে পারে। পাশাপাশি আমাদের কিছু কুকিজ পণ্য রপ্তানি হতো, সেটি কমে যাচ্ছে কি না, তা দেখার সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান কমে যাওয়া ছাড়াও পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ব্যয় বাড়তে পারে। তবে অযৌক্তিকভাবে গম আমদানি কমে যাওয়া খাদ্য নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগের। এই উদ্বেগ কাটাতে সরকারকে গম আমদানিতে বাধা দূর করতে হবে। বিশেষ করে বর্তমানের সংকটময় পরিস্থিতিতে গমের চাহিদা ও উৎপাদন সঠিকভাবে নির্ধারণ করে আমদানির পরিমাণ ঠিক রাখতে হবে।
গত এক যুগের গম আমদানি ও উৎপাদনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, প্রতিবছরই স্বল্প পরিমাণে চাল ও গমের ব্যবহার বাড়ছে। সেখানে চালের তুলনায় গমের ব্যবহার অধিক হারে বাড়ছে। গত ১২ বছরে গড়ে ৪৩ লাখ টন গম আমদানি হচ্ছে। অন্যদিকে গত তিন বছরে গড়ে প্রতিবছর ৫৩ লাখ টন গম আমদানি হচ্ছে। তুলা ও ভোজ্য তেলের পরই এখন আমদানিতে শীর্ষ ব্যয় গমে। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রায় এক লাখ ১৬ হাজার ৪৩১ কোটি টাকার খাদ্য ও কৃষিপণ্যের আমদানি হয়েছে। চাল, গম, দুধ ও দুগ্ধজাত, তেল, ডাল, তুলা, মসলাসহ বেশ কিছু প্রক্রিয়াজাত কৃষি ও খাদ্যপণ্য আমদানিতে বড় ধরনের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হচ্ছে। যদিও এই সময়ে রপ্তানি ১০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। এতে এক লাখ কোটি টাকার বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে।