ভোলায় ভালো মানের ঘাট আছে প্রায় ২৫টি। কয়েক বছর ধরেই এসব ঘাটে কালেভদ্রে আসে পাঙ্গাশ মাছ।
মৎস্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময় বৃদ্ধির পাশাপাশি কঠোরভাবে পরিপালন করার কারণে মাছ নিরাপদে ডিম ছাড়তে পারছে। এতে বংশবৃদ্ধি হচ্ছে পাঙ্গাশ মাছের। অন্যদিকে পাঙ্গাশ মাছের উৎপাদন ধ্বংসকারী বিভিন্ন পদ্ধতিগুলোও নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল ছয় জেলার পাঁচটি অভয়াশ্রমে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এ সময় বরিশাল, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, শরীয়তপুর ও পটুয়াখালী জেলার ইলিশ অভয়াশ্রম সংশ্লিষ্ট নদ-নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকে। অন্যদিকে গত শুক্রবার শেষ হয়েছে মা ইলিশ রক্ষার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এই সময় জেলেরা এক ধরনের বেকার সময় পার করেন। অন্যদিকে গত আগস্ট থেকে নিষিদ্ধ ছিল পাঙ্গাশ ধ্বংসকারী চাঁই পদ্ধতি। এর প্রভাব এবারের পাঙ্গাশ মাছ উৎপাদনে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ভোলা সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন।
জামাল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, এ বছর অভিযান চালিয়ে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ জাল ও পাঙ্গাশের পোনা ধ্বংস করার চাঁই জব্দ করা হয়েছে। যার কারণেই নদীতে পাঙ্গাশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া মা ইলিশ রক্ষা অভিযানও সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় দীর্ঘদিন নদীতে কোনো জাল ছিল না। তাই অভিযান শেষে জেলেদের জালে প্রচুর পাঙ্গাশ ধরা পড়ছে।
মৎস্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদীতে ছোট আকারের পাঙ্গাশ মাছ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মাছের বংশ বৃদ্ধির সুযোগ প্রধান কারণ হবে। কিন্তু নদীতে বড় মাছ ধরা পড়ার প্রধান কারণ হলো গভীর নদীতে মাছের খাদ্যসংকট কিংবা গভীর নদীতে বসবাসে ঝুঁকি তৈরি হওয়া।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য অনুষদের অ্যাকোয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মাহফুজুল হক রিপন কালের কণ্ঠকে বলেন, গত কয়েক মাস দেশে সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে জৈব পদার্থ ভেসে গিয়ে পচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নদীতে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। নদীর গভীরে খাদ্যসংকট হওয়ার কারণে মাছ উজানে আসছে। এর কারণেই মাছ ধরা পড়ছে। তবে এটি নিয়ে আরো গবেষণার প্রয়োজন।
(প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন বরিশাল প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম ও ভোলা প্রতিনিধি ইকরামুল আলম)